অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দেশে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্তদের মধ্যে বছরে মৃত্যু হার ৭০ হাজার থেকে ৪০ হাজারে নেমেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বলেন, ‘তবে যক্ষ্মায় আমাদের দেশে মৃত্যু এখনো বেশি। প্রতিবছর ৩ লাখ যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হচ্ছে।’
বাংলাদেশে নবম টিবি যৌথ পর্যবেক্ষণ মিশনের (জেএমএম) প্রচার কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
দেশে যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসায় অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিবি রোগ স্ক্রিনিং কার্যক্রম চলছে। আমাদের সকল হাসপাতালে পরীক্ষার যন্ত্রপাতি রয়েছে। প্রতিবছর ৩ লাখ যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। মৃত্যুর হার ৭০ হাজার থেকে ৪০ হাজারে নেমে এসেছে। তবে আমাদের মৃত্যু বেশি। কারণ আমাদের জনসংখ্যাও বেশি।’
দেশে যক্ষ্মা রোগ নিয়ে স্টিগমা রয়েছে মন্তব্য করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘তবে পরিবর্তন আসছে। মানুষ চিকিৎসা কেন্দ্রে যাচ্ছে। ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ রোগী এখন দেশে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হচ্ছে। আমরা চাই মানুষ চিকিৎসা নিতে আসুক।’
দেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যু বাড়ছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘সংক্রমণ ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে মাঝেমধ্যেই মহামারি দেখা যাচ্ছে। আমরা সেসব নিয়ন্ত্রণে সবসময় প্রস্তুত আছি। এরপরও অসংক্রামক রোগে মৃত্যু বেশি হচ্ছে। শতকরা ৭০ ভাগ মৃত্যু হচ্ছে নানা ধরনের অসংক্রামক রোগে।’
দেশে উৎপাদিত যক্ষ্মা রোগের ওষুধ রপ্তানির কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশেই এখন টিবির ওষুধ তৈরি হচ্ছে। এগুলো দেশে ব্যবহারের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করবো। আমাদের ভালো মানের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। টিবিতে আমাদের যে বাজেট বরাদ্দ রয়েছে প্রয়োজনে তা বাড়ানো হবে।’
মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দেশের স্বাস্থ্যখাতের ওপর চাপ পড়েছিল উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্যখাত চাপ পড়েছিল। হাসপাতালের বেশিরভাগ শয্যা করোনা রোগীদের জন্য দিয়ে দিতে হয়েছিল। সরকারকে নতুন নতুন হাসপাতাল করতে হয়েছে৷’
‘করোনার কারণে টিবিসহ অন্যান্য সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। তবে করোনা নিয়ন্ত্রণ করে খুব দ্রুতই আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছি। বাংলাদেশে ৯০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। যেখানে সারাবিশ্বে ৭০ ভাগ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে।’
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করার আহবান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়েছে। প্রতিদিন শতশত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এখন প্রতি জেলাতেই রোগী পাওয়া যাচ্ছে। আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের আমারা সহায়তাও দিচ্ছি।’
ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিতে স্বাস্থ্য খাত সব সময় প্রস্তুত আছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী কমাতে মশা কমানো বিষয়ে স্থানীয় সরকারকে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। যক্ষ্মা ও এইডসের মতো রোগ প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এগিয়ে আসায় তাদের ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদারসহ প্রমুখ অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply